রমাকান্ত আচরেকর। সচিন টেন্ডুলকারের শিক্ষাগু'রু। সচিনকে হাতে ধরে খেলা শিখিয়েছিলেন তিনি। বিনিময়ে সচিনও তাঁকে যথার্থ গু'রুদক্ষিণা দিয়েছেন। বিশ্বের প্রতিটি শিক্ষকই বোধ হয় নিরন্তর সংগ্রাম করে যান সচিনের
মতো ছাত্র গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু সব ছাত্র বোধহয় সচিনের মতো গু'রুদক্ষিণা দিতে পারেন না। ক্রিকে'টের শিক্ষাগু'রুকে সচিন যেমন দিয়েছিলেন। তবে মুম্বইয়ের সেই ছোট ছেলেটির বিশ্বের দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্যাটসম্যান হওয়ার পিছনে অবদান রয়েছে তাঁর কোচ রমাকান্তের চড়ের।
একটি ম্যাচ মিস করার জন্য সজোরে শচীনের বাঁ গালে চড় মেরেছিলেন রমাকান্ত। এততাই জোরে মেরেছিলেন যে হাতের টিফিন বাক্স মাটিতে পড়ে ছিটকে গিয়েছিল সমস্ত খাবার। ২০১৯ সালে ৮৬ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে রমাকান্তের মৃ'ত্যু হয়। এই প্রথিতযশা কোচের ৭৯তম জন্ম'দিনে মুম্বইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে জড়ো হয়েছিলেন শ’খানেক ছাত্র। সেখানেই পুরনো দিনের সেই স্মৃ'তিটি জানিয়েছিলেন শচীন।
রমাকান্তের ক্রিকেট স্কুলের নাম কামাথ মেমোরিয়াল ক্রিকেট ক্লাব। প্রতিদিনই স্কুলের পর শচীনের জন্য কিছু ম্যাচ রাখতেন রমাকান্ত। স্কুল ছুটি হলেই ক্লাবে গিয়ে খেলায় বুঁদ 'হতেন লিটল মাস্টার।
কিন্তু একদিন শচীন উল্টো কাজ করে বসেন। স্কুল ছুটির পর মাঠে না গিয়ে এক বন্ধুর স'ঙ্গে চলে যান ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। তার স্কুলের ইংরেজি এবং মা'রাঠি মিডিয়াম ছাত্রদের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। বন্ধুর স'ঙ্গে অতি মনোযোগ সহকারে ম্যাচ দেখছিলেন শচীন আর চিৎকার করে নিজের দলের মনোবল বাড়াচ্ছিলেন।
ম্যাচের মাঝেই আচমকা শচীনের চোখ আট'কে যায় দূরে তার গু'রুর দিকে। ওই দিন স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন রমাকান্তও। তখন বন্ধুকে স'ঙ্গে নিয়ে গু'রুর কাছে গিয়ে হাসি মুখে তার স'ঙ্গে কথা বলতে যান শচীন। তবে তার কথা শেষ হওয়ার আগেই উড়ে আসে গু'রুর চড়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় শচীন গালে হাত চেপে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপর গু'রুর নির্দেশেই ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে বাড়িতে ফিরে যান।
রমাকান্ত সেদিন শচীনকে বলেছিলেন, অন্যদের উৎসাহিত করার কাজ তোমা'র নয়। এমন ভাবে খেলতে হবে যেন স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক তোমা'র জন্য চিৎকার করেন। কঠোর পরিশ্রমের অর্থ কী, ওই চড়টাই শচীনকে বুঝিয়ে দেয়। এরপর আর কোনো দিন খেলায় ফাঁ'কি দেয়ার কথা মাথায় আনেননি তিনি।