আহ, সাকিব আল হাসান! যেমন খুশি তেমন কান্ড ঘটান। দেশের ক্রিকে'টের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও যেন তাকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। তিনি ছুটি চান, ছুটি পেয়েও যান। এবং এর আগেও প্রশ্ন উঠেছে দেশের প্রতি তারঁ নিবেদন নিয়ে। কিন্ত যখন সে ছুটি হয় আইপিএলের জন্য তখন তা নিয়ে প্রশ্নের স্রোত হয়ে উঠে আরও বেগবান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররাই এর সবচে বড় ও উৎকৃষ্ট উদাহরণ। অবশ্য প্রাধান্যতার এ বি'ষয় সব ধরনের লীগের জন্য যে তা কিন্ত নয়। বিশেষ করে তা বিশ্বের সেরা লীগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের জন্যেই।
তো ক্রিকেটারদের আইপিএলে খেলতে দিলে সে ক্রিকেটারের বোর্ডের এতে কি কোন লাভ আছে? প্রত্যক্ষ লাভটা আইপিএলে খেলোয়াড়দের বেতন কাঠামোর একটা অংশ খেয়াল করলেই খুজে পাওয়া যায়।
আইপিএলের নিলামে কোন খেলোয়াড়কে যত টাকায় কেনা হয়, তাই ঐ খেলোয়াড়ের বেতন এবং তিনি এক মৌসুমে উপস্থিতির জন্যই তা পাবেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্যমতে কোন খেলোয়াড়ের যত বেতন হয় তার ২০ শতাংশ বিসিসিআই (দ্যা বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া) ওই খেলোয়াড়ের বোর্ডকে প্রদান করে।
তবে সেটা ওই খেলোয়াড়ের বেতন থেকে কে'টে নয়, বিসিসিআইয়ের আইপিএল কেন্দ্রীয় রাজস্ব পুল থেকেই তা দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে। আর খেলোয়াড় তাঁর বেতনের পুরো টাকা'টাই পান।
ধরুন, ইংল্যান্ডের একজন ক্রিকেটার বিক্রি হলেন ১০ কোটি টাকায়, তো আইপিএলে যদি সে ক্রিকেটার উপস্থিত থাকেন তাহলে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড পাবে এর ২০ শতাংশ অর্থাৎ ২ কোটি টাকা।
সাকিব আল হাসানকে কলকাতা নাইট রাইডার্স ২০২১ সালের আইপিএলের নিলামে প্রায় ৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকায় কিনেছে। শ্রীলঙ্কার বিরু'দ্ধে দুই টেস্টের সিরিজে ছুটি নিয়ে সাকিব যাব'ে আইপিএলে খেলতে। তো এতে বিসিবির কি লাভ? বিসিবি পাবে এর ২০ শতাংশ পরিমাণ টাকা। তার মানে বিসিবির কোষাগারে জমা হবে প্রায় ৭৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
সাকিবের একমাত্র বাংলাদেশী স'ঙ্গী হিসেবে আইপিএলে যাওয়ার সুযোগ আছে মুস্তাফিজুর রহমানের। তবে মুস্তাফিজ আইপিএল খেলতে যাব'েন কি না সে সি'দ্ধান্ত বিসিবি ছেড়ে দিয়েছিল মুস্তাফিজেরই উপর। এবং মুস্তাফিজ বলেছেন তাঁর কাছে আগে দেশ, পরে আইপিএল।
যদি দেশের খেলার পরে বা দেশের দায়িত্ব থাকে না এমন সময়ে আইপিএলে খেলার সুযোগ থাকে তখনই বিসিবির অনুমতি পেলে তিনি যাব'েন আইপিএলে। চতুর্দশ আইপিএলের আগে নিলামে মুস্তাফিজুর রহমানকে রাজস্থান রয়্যালস কিনেছে তারঁ ভিত্তিমুল্য ১ কোটি ১৭ লাখ টাকায়।
যদি মুস্তাফিজ আইপিএলে খেলতে যান তাহলে সেখানেও আছে বিসিবির লাভ। বাহাতি এ পেসারের আইপিএলে খেলার বিনিময়ে বিসিসিআইয়ের থেকে বিসিবির কোষাগারে জমা হবে প্রায় ২৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। মুস্তাফিজের আইপিএলে যাওয়া-না যাওয়া বলে দিবে সময়ই। এবার না-হয় আবার ফিরা যাক সাকিবেই।
বিসিবি সাকিবকে ছুটি দিল। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাড়াল যে- সা'পও মর'ল, লাঠিও ভা'ঙ্গলো না। সাকিবের পছন্দের ফরম্যাটের তালিকায় সবশেষেই আছে টেস্ট। সে টেস্ট না খেলে আইপিএলে খেলতে পারলে সাকিব অবশ্যই তাই খুশি হবেন।
এদিকে বিসিবিও এতে কিছুটা আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হলো। তবে শুধুই যে আর্থিক দিকের কারণেই বিসিবি সাকিবকে দেশের বদলে আইপিএলে খেলার অনুমতি দিয়ে দিবে, সেটাও ধারণা করা যায় কি? আসল কারণ কি আ মর'া কেউই জানিনা। আ মর'া যেটা করতে পারি, সেটা হচ্ছে শুধুই অনুমান। আর কিছু প্রশ্ন, যেসবের উত্তর আদৌ পাবো কিনা তাঁরও উত্তর জানিনা।
বিসিবি সভাপতিও জানিয়ে দিয়েছেন যে চাইবে সেই খেলতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট, দেশের খেলা থাকলেও। এতে বিসিবি আর্থিক দিয়ে কিছুটা লাভবান হলেও ক্ষ'তিটা যে হবে আমা'দের ক্রিকে'টেরই!