ঢাকা: দেশের ক্রিকে'টের আইকন সাকিব আল হাসান। কখনো মাইলফলক আবার কখনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য দেশে আর দেশের বাইরে প্রায় সময়ই থাকেন আলোচনায়।
সাকিব বাংলার সুপার বয় ক্রিকেটার থেকে ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন বিজনেস আইকন। নানামুখী বিনিয়োগ আর ব্যবসার মাধ্যমে কর্পোরেট জগতে এরই মধ্যে নিজের পরিসর বড় করেছেন সাকিব। ক্যারিয়ারের গৌধূলি ল'গ্নে এসে সাকিব এবার সোনা ব্যবসায় নাম লিখিয়েছেন। এত ব্যবসা থাকতে স্বর্ণের দিকে কেন নজর গেল তার সেটা সাকিব নিজেই জানিয়েছেন।
সাকিব জানান, ২০০৬ সালে যখন জিম্বাবুয়ে যাচ্ছিলাম, তার আগে আমা'দের ২-৩টা ম্যাচ ছিল সারজাতে। তখন আ মর'া সিটি সেন্টারে ঘুরতে যাই। সেখানে ফার্স্ট টাইম এই গোল্ডবার দেখি। গত একশ বছরের রেকর্ড দেখেন আমি যদি ভুল না করে থাকি। গোল্ডের দাম কখনো কমেনি। দুনিয়াতে অনেক কিছুরই অবচয় আছে কিন্তু গোল্ডের নেই। সো সেইফ ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে মানুষ কিনতেই পারে।
রেস্টুরেন্টে বিনিয়োগের মাধ্যমে সাকিবের ব্যবসায় হাতে খড়ি। এরপর দ্রুতই নিজের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডল বড় করেছেন। দেশের শেয়ার বাজার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, প্রসাধনী ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, ই-কমা'র্স ইভেন্ট, খামা'রসহ এবার স্বর্ণ ব্যবসায়ও নাম লেখালেন সাকিব।
এত এত বিনিয়োগ যার বর্তমানে কত টাকা আয় তার? এ প্রশ্নই জানতে চান তার ভক্তরা। তারকাদের আয় ও জীবনযাত্রা নিয়ে যারা গবেষণা করেন এমনকি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সাকিবের আয় ও সম্পত্তির পরিমাণের তথ্য উঠে এসেছে।
ক্রিকটেকারের সূত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালে সাকিবের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল সাড়ে তিন কোটি ডলার। ২০১৯ সালে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় তিন কোটি ৬০ লাখে। আর ২০২১ সালে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ৪ লাখ ডলারে। বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৪০ কোটি টাকা।
এত সম্পদ ব্যাংকে ফেলে না রেখে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছেন সাকিব। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গু'লোর সাম্প্রতিক চিত্র দেখা যাক, সবকিছুকে ছাড়িয়ে শেয়ার বাজারে বড় অ 'ঙ্কের বিনিয়োগ করেছেন সাকিব। পুঁজিবাজারের বড় বড় খেলোয়াড়দের স'ঙ্গে খেলছেন সাকিব। সম্প্রতি একটি ব্রোকার হাউজের অনুমোদনও পেয়েছেন এই ক্রিকেটার। চট্রগ্রামে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করেছেন সাকিব।
বনানীতে সাকিব ডাইন’স নামে একটি রেস্টুরেন্ট ছিল তার। যদিও কিছুদিন পর সেই রেস্টুরেন্ট বিক্রি করে দেন সাকিব।
বর্তমানে মিরপুর আর ধানমন্ডিতে ‘সাকিব ৭৫’ নামে দুটি রেস্টুরেন্ট আছে তার। ২০১৬ সালে সাতক্ষীরায় ১৪ একর জমিতে কাঁকড়ার খামা'র গড়ে তুলেন। যদিও গত দুই বছর ধরে খামা'রটি বন্ধ আছে।
স্ত্রী শিশিরের আগ্রহে প্রসাধনী ব্যবসায়েও নাম লেখান সাকিব। জমুনা ফিউচার ফার্কে কসমিক জবিয়ার নামে একটি শপও আছে তাদের। বিশ্বের নামি-দামি ব্র্যান্ডের কসমেটিকস সংগ্রহ করা প্রতিষ্ঠানটিও এখন বন্ধ। এদিকে কক্সবাজারে হোয়াইট সেন্ট রিসোর্ট নামে হোটেল ও শপিং মলে ২০ হাজার বর্গফুটের বাণিজ্যিক স্পেস কেনার চুক্তিও করেছেন।
কক্সবাজারে সাকিবের ব্যবসা
৭৫ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্ট নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিও দেন। তবে করো'নার কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাট-বলে সাকিবের যে সাফল্য সাকিবের। সেটি অবশ্য এখনো ধ’রা দেয়নি ব্যবসায়। দেশে তার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ধুকছে। তবে এত প্রতিষ্ঠান না রেখে শুধু লাভজনক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিদেশমুখি হচ্ছেন সাকিব।
ও মর'া করতে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে ভাড়া দিতে সৌদি আরবে একাধিক আবাসিক হোটেল কিনেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতেও বিনিয়োগ করেছেন সাকিব। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উইস কন্সিস স্ট্রিটে বাড়িও কিনেছেন সাকিব।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে বেতন, বিভিন্ন লিগ ও ব্যবসা মিলিয়ে সাকিবের বার্ষিক আয় প্রায় এক কোটির কাছাকাছি। আর বর্তমান আয় ও সম্পত্তি মিলিয়ে সাকিবের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪০ কোটির উপরে।