গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মানেই লোয়ার অর্ডারে ঝড়, স'ঙ্গে কার্যকরী স্পিন বোলিং তো আছেই। নিজের দিনে যেকোনো বোলিং আ'ক্রমণকে কচুকা'টা করার ক্ষমতা আছে এই অলরাউন্ডারের। যে কারণে প্রায় প্রতি আইপিএলের নিলামেই বেশ কদর থাকে এই অলরাউন্ডারের। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, দিল্লি ক্যাপিটালসসহ একাধিক আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির জার্সিতে দেখা গেছে ম্যাক্সওয়েলকে।
কিন্তু এক-দেড় বছর ধরে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে সেই ঝড় যেন দেখাই যাচ্ছিল না। গত আইপিএলের কথাই ধরুন, কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে এত বাজে খেলেছিলেন, যে এবারের আইপিএলে দল পান কি না, সে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। শেষমেশ ম্যাক্সওয়েলকে কিনে নিয়েছে বিরাট কোহলির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বে'ঙ্গালুরু। তা–ও আবার যেমন তেমন দামে নয়।
অস্ট্রেলিয়ান এই অলরাউন্ডারকে পেতে আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজি চেন্নাই সুপার কিংসের স'ঙ্গে দীর্ঘক্ষণ লড়াই করে পাক্কা ১৪ কোটি ২৫ লাখ রুপি খসাতে হয়েছে বে'ঙ্গালুরুকে। যে খেলোয়াড় গত মৌসুমে বলতে গেলে কিছুই করতে পারেননি, যে খেলোয়াড় এই মৌসুমে দল পাবেন কি না, সেটা নিয়েই সন্দে'হ ছিল, সে খেলোয়াড়কে পাওয়ার জন্য এত টাকা কেন খরচ করল বে'ঙ্গালুরু?
সমালোচনা উঠেছিল চারপাশে। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ম্যাক্সওয়েল যেন সেই পুরোনো কথাটাই সুদে-আসলে বুঝিয়ে দিলেন, ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট!’ কিন্তু কী করেছেন ম্যাক্সওয়েল? জিমি নিশামকে কচুকা'টা করেছেন। মিডিয়াম এই পেসারের এক ওভারে নিয়েছেন ২৮ রান। সব মিলিয়ে ৩১ বলে ৭০ রানের এক দুর্ধ'র্ষ ইনিংস খেলেছেন।
চার মেরেছেন আট'টা, ছক্কা পাঁচটা। চোখে পড়েছে পেশিশক্তির অনুপম প্রদর্শনী। যেন একেকটা বল স্ট্যান্ডে আছড়ে ফেলছিলেন, আর সমালোচকদের মুখে দিচ্ছিলেন একেকটা চপেটাঘা'ত! শুধু তা–ই নয়, ছক্কা মেরে ফাঁ'কা গ্যালারির একটা চেয়ারও ভেঙেছেন। যেন কত দিন ধরে সমালোচকদের জন্য রাগ পুষে রেখেছিলেন মনে মনে! হাফ সেঞ্চুরি করতে খরচ করেছেন মাত্র ২৫ বল।
অর্থাৎ বাকি ২০ রান নিয়েছেন মাত্র ছয় বলে। শেষমেশ ১৭ ওভারের শেষ বলে পেসার টিম সাউদিই থামিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল-ঝড়। তবে টম সেইফার্টের হাতে ধ’রা পড়ার আগে যা করার করে ফেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। ২০ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তুলেছেন ২০৮ রান। আর এই রান তোলার পেছনে শুধু ম্যাক্সওয়েল নয়, অবদান আছে অ্যারন ফিঞ্চ আর জশ ফিলিপেরও।
ম্যাক্সওয়েলের মতো ফিঞ্চও যেন সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে নেমেছিলেন। সময়টা ভালো যাচ্ছিল না অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কেরও। বিগ ব্যাশে রান পাননি। আইপিএলের নিলামে কোনো দল তাঁকে নেয়নি। ছেড়ে দিয়েছে বে'ঙ্গালুরু। সেটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম হয়নি। চলতি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও চেনা ফিঞ্চকে দেখা যায়নি।
প্রথম ম্যাচে ১ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ১২ রান। দলও হেরেছে। অস্ট্রেলিয়ার স মর'্থকদের ধৈর্য কুলায়নি আর। ফিঞ্চের পারফরম্যান্সে 'হতাশ হয়ে তাঁর স্ত্রী এমি ফিঞ্চকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিং'সতা ও যৌ'ন নি'র্যাতনের হু’মকি দিয়েছেন কিছু অস্ট্রেলীয় স মর'্থক।
পরে বি'ষয়টি খোলাসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন ফিঞ্চের স্ত্রী। মাথায় সে নিয়ে ক্ষোভ ছিল কি না কে জানে, ৪৪ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। মেরেছেন দুটি ছক্কা আর আট'টি চার। ২৭ বলে ৪৩ রান করেছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জশ ফিলিপে।
ব্যাটিংয়ে নেমে মা'র্টিন গাপটিলের কল্যাণে প্রথমে ঝড় তুললেও পরে বেকায়দায় পড়েছে নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ফিরিয়ে এনেছেন প্রথমে অ'ভিষিক্ত রাইলি মেরে'ডিথ, ও পরে অ্যাশটন আগার। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৩ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১১১ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচ হারলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ হেরে বসবে অস্ট্রেলিয়া।