গেল ১৪ ফেব্রুয়ারী বসন্ত আর ভালোবাসার দিনে রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে স্বল্প পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের একসময়কার নিয়মিত মুখ ‘ব্যাডবয়’ খ্যাত তারকা অলরাউন্ডার নাসির হোসেন।
বিয়ের অনুষ্ঠানে তার পরিবারের লোকজন এবং ঘনিষ্ঠ আ'ত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এরইমধ্যে বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ পেল, যা শুনে 'হতভম্ব নাসিরের ভক্তসহ দেশের ক্রীড়া'ঙ্গন।
জানা গেছে, নাসিরের সহধ'র্মিণী তামিমা হোসেন তাম্মির এটাই প্রথম বিয়ে নয়। তার আরও এক স্বামী রয়েছে এবং সেই সংসারে ৮ বছরের একটি কন্যাসন্তান আছে। আর সেই স্বামী-সন্তানকে ফেলে এসে নাসিরের স'ঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন তামিমা।
তামিমা'র সেই স্বামীর নাম রাকিব হাসান। তার দাবি, তামিমা'র স'ঙ্গে ১১ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন তিনি। তাদের ঘরে ৮ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে। তামিমা তাকে তালাক না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরের স'ঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আব'দ্ধ হয়েছেন। এ বি'ষয়ে আইনগত পদ'ক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন রাকিব হাসান। ইতোমধ্যে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছেন রাকিব। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস জিডির বি'ষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেই জিডির কপিতে আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। জিডিতে লেখা অনুযায়ী, রাকিব-নাসির ছাড়াও তামিমা'র ছিল আরেক সংসার। যেখানে তামিমা সংসার করেছেন মাত্র ৬ মাস। আর এটি হয়েছে রাকিবের সাথে সংসার চলাকালীন সময়েই।
ছয়মাস সংসার করার পর রাকিবের কাছে ফিরে এসে ক্ষ'মাও চেয়েছিলেন তামিমা। তামিমা বলেছিলেন, কখনো এমন হবেনা। এরপর মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে তাকে ক্ষ'মা করে দেয় রাকিব হাসান। কিন্তু এর কয়দিন পর নাসিরের সাথে সম্পর্কের বি'ষয়টি প্রকাশ পায়।
রাকিব হাসান বলেন, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তামিমা'র স'ঙ্গে আমা'র বিয়ে হয়। বিয়ের পর অনেক বছর তামিমা'র পক্ষের কোনো আ'ত্মীয়স্বজনের দেখা পাইনি। বছরচারেক আগে আমা'র ভাইয়ের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তামিমাকে সৌদি এয়ারলাইন্সে চাকরি পাইয়ে দিই। এই চাকরি পাওয়ার পর থেকেই সে (তামিমা) বদলে যেতে থাকে।
এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। যদি পূর্বের স্বামী রাকিব মা'মলা করেন তাহলে আইনে তামিমা'র কী 'হতে পারে আসুন জেনে নেই-
মুসলিম আইন অনুযায়ী, এ রকম বিয়ে বৈধ বলে গণ্য হবে না। এই বিয়ে বাতিল বা অবৈ'ধ বিবাহ বলে গণ্য হবে।
এ বি'ষয়ে বরগু'না জজকোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, অন্য কারো স'ঙ্গে বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে তাকে ডিভোর্স নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পর সেই নারী বিয়ে করতে পারবে। চাইলেই ডিভোর্সের পরদিনই বিয়ে করতে পারবে না। এটা শাস্তিযোগ্য অ'পরাধ।
বিধান অনুযায়ী, ১৮৬০ সালের দ'ণ্ডবিধির ৪৯৪ ধা'রায় বলা আছে, পূর্বের বিয়ে থাকা অবস্থায় কোনো স্ত্রী একাধিক বিয়েতে আব'দ্ধ হলে ৭ (সাত) বছর কারা'দ'ণ্ড, অর্থদ'ণ্ড বা উভয়দ'ণ্ড 'হতে পারে, আর ৪৯৫ ধা'রায় বলা আছে যদি পূর্বের বিয়ে গো'পন করে তাহলে ১০ বছর কারা'দ'ণ্ড এবং অর্থদ'ণ্ড অথবা উভয় দ'ণ্ডে দ'ণ্ডিত হবে।
তবে ৪৯৪ ধা'রার একটা ব্যতিক্রম ছিল, যদি সাত বছর ধরে স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে এবং জীবিত আছে এ রকম কোনো সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। শর্ত হলো, নতুন বিয়েতে পূর্বের বিয়ের সকল ঘটনা সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।
এদিকে স্বামীও যদি একই কাজ করেন তাহলে তার জন্যও এটা শাস্তিযোগ্য অ'পরাধ। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে ও তার ভরণপোষণ না দেয়া একটি ফৌজদারি অ'পরাধ।
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর ৬ ধা'রামতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না। আর তাই প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে অবৈ'ধ বলে গণ্য হবে।
এ অবস্থায় প্রতিকার পেতে আপনি ম্যাজিস্ট্রেট আ'দালতে দ'ণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মা'মলা করতে পারেন। এ সময় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আ'দালতে দেখাতে হবে। আপনার স্বামীর অ'পরাধ প্রমাণিত হলে সাত বছর পর্যন্ত কারা'দ'ণ্ড ও অর্থদ'ণ্ডে দ'ণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া সন্তান থাকলে আপনি তার ভরণপোষণ পাবেন। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক আ'দালতে ভরণপোষণ চেয়ে মা'মলা করতে পারেন।