উইকে'টের পেছনে ক্ষিপ্রগতিতে স্ট্যাম্পিংয়ের ভুরিভুরি উদাহরণ রয়েছে ভারতের কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক ম হে'ন্দ্র সিং ধোনির। গত কয়েকবছর ধরে কোনো উইকেটরক্ষক এমন ক্ষিপ্র কিছু করলেই সামনে চলে আসে ধোনির নাম। যেমনটা এবার করলেন বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক লিটন দাস। এক মুহূর্তের জন্য যেনো লিটনই হয়ে গেলেন ‘ধোনি’।
লিটনের দুর্দান্ত কিপিংয়ে ক্যারিবীয়দের ষষ্ঠ উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে পাওয়া লিডের স'ঙ্গে আর ৭৩ রান যোগ করতেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪৮ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৬ উইকে'টে ৯৮ রান। তাদের লিড এখন ২১১ রানের।
দিনের ১৪তম ওভারে তাইজুলের ঝুলিয়ে বলটি শার্প টার্ন করে জার্মেইন ব্ল্যা'কউডের ডিফেন্স ফাঁ'কি দিয়ে চলে যায় লিটনের গ্লাভসে। ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে পপিং ক্রিজ থেকে সামান্যই বেরিয়েছিলেন ব্ল্যা'কউড। এই সুযোগটিই নেন লিটন। তড়িৎ গতিতে ভেঙে দেন স্ট্যাম্প, আম্পায়ার আউট দেয়ার আগেই মাতেন উল্লাসে।
লেগ আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ সি'দ্ধান্ত পাঠান থার্ড আম্পায়ার গাজী সোহেলের কাছে। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, লিটন স্ট্যাম্প ভাঙার সময় ব্ল্যা'কউডের পা ছিল পপিং ক্রিজের দাগের ঠিক বাইরে। যে কারণে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে ১ ছয়ের মা'রে ৯ রান করা ব্ল্যা'কউডকে। এ উইকে'টের মূল কৃতিত্ব নিঃসন্দে'হে উইকেটরক্ষক লিটনেরই।
আগেরদিন ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ভালো শুরু করেছিল বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা ধা'রাবাহিকতা বজায় রেখেছে চতুর্থ দিন সকালেও। আজ (রোববার) দিনের পঞ্চম ওভারেই প্রথম উইকে'টের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা জোমেল ওয়ারিকানকে সাজঘরে পাঠিয়ে দিনের শুরুটা ইতিবাচকভাবেই করে বাংলাদেশ।
ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ রাহীর হাত ধরে মেলে প্রথম সাফল্য। ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে নতুন বলটা দলের একমাত্র পেসার রাহীর হাতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। মূলত তৃতীয় দিনে হওয়া ২১ ওভারের মধ্যে এক ওভারও পাননি রাহী।
তবে আজ রৌদ্রজ্জ্বল দিনে রাহীকে দিয়েই বোলিংয়ের শুরুটা করেছে বাংলাদেশ। সফলতা মিলতেও খুব একটা দেরি হয়নি। দিনের পঞ্চম ও রাহীর করা তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁ'দে পড়েছেন ওয়ারিকান। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিল পরিষ্কার আউট এটি। যে কারণে রিভিউ নেয়নি ক্যারিবীয়রা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকে'টে ৫০ রান। সে ওভারেই তারা হারাতে পারত পঞ্চম উইকেটও। চতুর্থ উইকেট পতনের পর উইকে'টে আসেন আগের ম্যাচের নায়ক কাইল মায়ারস। প্রথম বলেই চার মেরে শুরু করেন তিনি।
সেই ওভারের শেষ বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল অফস্ট্যাম্প দিয়ে। ব্যাট এগিয়ে দিয়েও সরিয়ে নেন মায়ারস, বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে। বাংলাদেশ দল আবেদন করলেও আউট দেননি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থ। রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, সেই বলটি লিটনের গ্লাভসে যাওয়ার পথে মায়ারসের ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে গেছে। অর্থাৎ রিভিউ নিলে সে উইকেটটি পেতে পারত বাংলাদেশ, সাজঘরের পথ ধরতে 'হতো মায়ারসকে। বাংলাদেশের সি'দ্ধান্থীনতায় তা আর হয়নি।
তবে বেশিক্ষণ উইকে'টেও থাকা হয়নি মায়ারসের। রাহীর বলেই আউট হয়েছেন তিনি। দিনের ১১তম ওভারের প্রথম বলটি শার্প সুইংয়ে ঢুকে যায় ভেতরে। ব্যাট নামিয়ে এনেও খেলতে পারেননি মায়ারস, আঘা'ত হানে প্যাডে। বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার ইলিংওর্থ, উল্লাসে মাতে টাইগাররা।
মায়ারস ভেবেছিলেন বলটি লেগস্ট্যাম্প দিয়ে বেরিয়ে যাব'ে। তাই নেন রিভিউ। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায়, রাহীর সেই বল লেগস্ট্যাম্প চুমু দিয়েই যেত। যে কারণে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি মায়ারস। তার ইনিংস থেমেছে ১৬ বলে ৬ রান করে। উইকে'টে আছেন এনক্রুমাহ বোনার ও জশুয়া ডা সিলভা।