শেষ হয়ে গেল ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। বাংলাদেশ অল-আউট হয়েছে ২৯৬ রানে। ১১৩ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকে'টে ৪১ রান তুলে দিন শেষ করেছে উইন্ডিজ। তাদের লিড হয়েছে ১৫৪ রানের। বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হলো, তিন স্পিনার নামিয়ে শেষ বেলায় তারা ৩ উইকেট তুলে নিতে পেরেছে। চতুর্থ দিনে উইকেট আরও কঠিন হবে। মুমিনুলদের টার্গেট 'হতে হবে যত দ্রুত সম্ভব ক্যারিবীয়দের গু'টিয়ে দেওয়া, যাতে টার্গেট কম হয়। তৃতীয় দিন পর্যন্ত স্পষ্টত ব্যাকফুটে আছে বাংলাদেশ।
উইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে বোলিং ওপেন করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। অন্যপ্রান্তে ছিলেন আরেক স্পিনার নাঈম হাসান। নাঈমের ঘূর্ণিতেই প্রথম সাফল্য আসে। দলীয় ১১ রানে উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে ধ’রা পড়েন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাফেট (৬)। পরের শিকার ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ২০ রানে মোসলেকে (৭) মো হা'ম্ম'দ মিঠুনের তালুব'ন্দি করে টেস্ট ক্রিকে'টে ১০০ উইকেট পূরণ করেন এই অল-রাউন্ডার। দিনের শেষদিকে অ'পর ওপেনার জন ক্যাম্পবেলকে (১৮) বোল্ড করে দেন তাইজুল ইসলাম। তৃতীয় দিন শেষে ক্যারিবীয়দের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকে'টে ৪১ রান।
উইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে করা ৪০৯ রানের জবাবে ৪ উইকে'টে ১০৫ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করা বাংলাদেশ দল আজ শনিবার তৃতীয় দিনের শুরুতে ভালোই শুরু করেছিল। দুই অ'পরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আর মো হা'ম্ম'দ মিঠুন নির্ভরতা যোগাচ্ছিলেন। ক্যারিয়ারের ২২ নম্বর ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, হয়তো এই জুটিতেই ফলোঅন এড়াবে বাংলাদেশ। কিন্তু বিধি বাম। প্রথম ঘণ্টার শেষ দিকে সেই রাকিম কর্নওয়ালের ঘূর্ণিতে ছন্দপতন। ব্রাফেটের চোখ ধাঁধানো ক্যাচে বিদায় নেন ধৈর্য্যের প্রতিমূর্তি হয়ে থাকা মো হা'ম্ম'দ মিঠুন। ৮৬ বলে তার সংগ্রহ ১৫ রান। এর স'ঙ্গে ভাঙে ১৮১ বলে ৭১ রানের জুটি।
বাংলাদেশ দল ভরসা রাখছিল ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ খ্যাত মুশফিকুর রহিমের ওপর। নতুন স'ঙ্গী লিটন দাসকে নিয়ে হাফ সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক ক্রিজে সেটও হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাকিম কর্নওয়ালের করা ৫০তম ওভারে তার কী যে হলো.. রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে কাইল মেয়ার্সের হাতে ক্যাচ দিলেন। ৫৪ রানে শেষ হলো তার ইনিংস। লিটনের স'ঙ্গী হলেন মেহেদী মিরাজ। এই জুটিতেই ফলো-অন এড়িয়ে যায় বাংলাদেশ দল। সপ্তম উইকে'টে তাদের জুটি ছুঁয়ে ফেলে তিন অংক। বাংলাদেশ শিবিরে ফিরে স্বস্তি। দ্বিতীয় সেশনে ২৭ ওভার খেলা হয়। আসে ৯৭ রান।
মিরাজ-লিটন দুজনেই ফিফটি পূরণ করে এগিয়ে যেতে থাকেন। ক্যারিয়ারের ৭ম ফিফটি তুলে নিতে লিটন দাস সময় নেন ৯২ বল, মা'রেন ৬টি বাউন্ডারি। আর ১১২ বলে সমান ৬ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। চা বিরতির পরও দুজন দারুন খেলছিলেন। হঠাৎ ছন্দপতন। শিকারী সেই রাকিম কর্নওয়াল। তার বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্ল্যা'কউডের হাতে ক্যাচ দেন ১৩৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৭১ রান করা লিটন দাস। ভাঙে ২৫৫ বলে ১২৬ রানের দারুণ জুটি। একই ওভারের পঞ্চম বলে নাঈম হাসানকে (০) ব্ল্যা'কউডের তালুব'ন্দি করে ৫ উইকেট পূরণ করেন কর্নওয়াল।
বাংলাদেশের ৯ম উইকে'টের পতন ঘটান শ্যানন গ্ যাব'্রিয়েল। তার বলে ১৪০ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫৭ রান করা মেহেদী হাসান মিরাজের সহজ ক্যাচ নেন ক্রেইগ ব্রাফেট। এরপর আবু জায়েদকে নিয়ে কিছুক্ষণ লড়াইয়ের চেষ্টা করেন তাইজুল (১৩*)। আবু জায়েদকে (১) এনক্রুমা বোনারের তালুব'ন্দি করে বাংলাদেশের ইনিংসে ইতি টেনে দেন আলজারি জোসেপ। ২৯৬ রানে অল-আউট হওয়া বাংলাদেশ ক্যারিবীয়দের চেয়ে ১১৩ রানে পিছিয়ে। ৩২ ওভার বল করে ৮ মেডেনসহ ৭৪ রানে ৫ উইকেট নেন রাকিম কর্নওয়াল। ৭০ রানে ৩ উইকেট নেন শ্যানন গ্ যাব'্রিয়েল। ২ উইকেট নেন আলজারি জোসেপ।